শাহবাগের উত্থানের পর বিএনপি ওখানে যাবে কি যাবে না মনস্থির করতে পারছিল না। এতবড় গণ জাগরণ, না গেলে জনতার বিরুদ্ধেই চলে যাওয়া হয় কিনা তা নিয়ে দুটানায় ছিল তারা।
কিন্তু আমার দেশ ও মাহমুদুর রহমান সরাসরি নাস্তিকদের অপকর্ম একের পর এক প্রকাশিত করায় দাবার চাল উল্টে চায়। বিএনপির দু দিল বান্দারা চুপসে যান।
কিন্তু মাঠে নামবে কে? শাহবাগের ওদিকে যাবে কে? র্যাব পুলিশ পাহারা দিয়ে একশো স্তরের নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা শাহবাগ। খাওন থাকন আমোদ ফুর্তি সব ফ্রি।
জাতিয়তাবাদী ও ইসলামী শক্তি টিভি দেখে আর শলা পরামর্শ করতেই করতেই সময় ক্ষয় করে। এই সময়ে জামায়াত নেতাদের ফাঁসির দাবি থেকে এগিয়ে গিয়ে শাহবাগ দেশের বিভিন্ন ইসলামী প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করতে থাকে, এসব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করার আগাম ঘোষণাও দিয়ে রাখে।
আচমকা দেখা গেল শাদা টুপি আর শাদা পাগড়ি অলা কিছু বোকাসোকা হুজুররা শাহবাগের বিরুদ্ধে মাঠে চলে এসেছেন। যারা গুলি খেয়েও সামনে এগোয়! দুনিয়াবি চোখে এরা স্রেফ বোকা ছাড়া কিছুই না।
সবাই জানত এরা দান সদকা দিয়ে মাদ্রাসা চালায় কিন্তু এত শক্তি, এত এনার্জেটিক তারুণ্য এরা কোথায় পেল? তাইলে ত এদেরকেও ইউজ করা যায়!
আজ যাদেরকে কংগ্রেসি ভারতপন্থি আওয়ামীলীগের দালাল বলে বিএনপিপন্থি ও কিছু ইসলামপন্থী ভাই বেরাদাররা গালাগালি করছেন, সেই দালাল ( ! ) আলেমরাই সেদিন বুকের রক্ত দিয়ে জীবন দিয়ে রাজনীতির হিসেব নিকেশটাই উল্টে দিয়েছিলেন।
এই উপমহাদেশের ইতিহাস যারা পাঠ করেছেন দেখতে পাবেন ইতিহাসের পাতায় লেগে আছে উলামায়ে কেরামের রক্তের দাগ। এরা যখন নামে রাজনীতির হিসাব নিকাশ করেনা, দ্বীন ও ঈমান রক্ষার জন্য নামে এবং আন্দোলন শেষে আবার তারা ফিরে যায় তাদের মাদ্রাসা ও মসজিদে।
আপনারা তাদেরকে পলিটিক্যালি ইউজ করতে চেয়েছেন শেখ হাসিনাও হয়ত তাই ই চেয়েছেন। ইনফ্যাক্ট আলেমরা হয়ত তারা নিজেদের গুরুত্বটা বুঝতে পেরেছেন একটু একটু করে।
আপনাদের উচিত ছিল কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি নেয়াকে স্বাগত জানানো। তা না করে এর বিরোধিতা করে, আলেমদের চৌদ্দগুষ্টির ইতিহাস ঘেটে এরা আগেই আওয়ামীলীগের দালাল ছিল, এসব বলে মুলত নিজেদের দৈন্যতারই বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছেন।
এতে লাভ হচ্ছে কিন্তু আলেমদেরই। তাদেরকে নিয়ে কারা ধান্ধাবাজী করতেন তা হয়ত ক্লিয়ার হচ্ছে ধীরে ধীরে।
দ্বীনি প্রতিষ্ঠান সমুহ রক্ষার জন্য আলেমদের দুরদর্শীতা আগামি দিনের ইতিহাসে লিখা থাকবে ইনশাআল্লাহ। জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াইয়ে মাদ্রাসাগুলোই হবে প্রতিরোধের শেষ দুর্গ।
শাহবাগের বিরুদ্ধে যেভাবে নিরস্ত্র প্রতিরোধ গড়েছিলেন ওলামায়ে কেরাম, তেমনি আগামি দিনেও দেশ স্বাধীনতা ও ঈমান রক্ষার জন্য তা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
কিন্তু কে হক এবং কে বাতিল কে জালিম এবং কে মজলুম তার সংজ্ঞা নির্ধারণ করবে কোরান ও হাদিস, বুদ্ধিজীবীরা নয়।